মাসায়েল24

২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রাত ৩:২৯
সাম্প্রতিক

রাসূল সা. মাটির তৈরী না কি নূরের তৈরী?

প্রশ্ন:জনৈক ব্যক্তির সকল আকিদা আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, শুধু তিনি রাসূল সা. কে নূরের তৈরী বলে বিশ্বাস করেন এবং এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনের সূরা মায়েদার ১৫ নং আয়াত এবং রাসূল সা. এর চেহারার নূর দ্বারা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর রাত্রিবেলায় সুই খুঁজে পাওয়া ইত্যাদি হাদীস দ্বারা দলিল পেশ করেন ৷ জানার বিষয় হল যদি রাসূল সাঃ মাটির তৈরী হয়ে থাকেন, তাহলে উপরে উল্লেখিত আয়াত ও হাদিসের জবাব কি? এবং উল্লেখিত ব্যক্তির এ আকীদা পোষণ করার দরুণ তাকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত বলা যাবে কিনা? যদি না ধরা হয়, তাহলে তাকে কোন ফেরকায় গণ্য করা হবে।

উত্তর:কোরআন হাদিসের অসংখ্য প্রমাণাদির মাধ্যমে সমস্ত আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত এই আকিদায় বিশ্বাসী যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রকৃত অর্থে একজন মাটির তৈরী মানুষ। তবে অন্যান্য সকল মানুষ ও ফেরেশতাদের থেকে শ্রেষ্ট। তাঁর অভ্যন্তর ছিল নুর ও হেদায়েতের দ্বরা ভরপুর। যার মাধ্যমে তিনি কুফর ও শিরকের অন্ধকারকে দূরীভূত করে দিয়েছেন। যেমন এরশাদ হয়েছে “আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ” এছাড়া আরো অসংখ্য হাদীস ও কোরআনে বর্ণিত আছে।

সুতরাং প্রশ্নে বর্নিত আয়াত দ্বারা তারা যে দলিল পেশ করে থাকে তা সম্পূর্ণ ভুল। কেননা উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা কেউই আল্লাহর জাতি নূর উদ্দেশ্য নেননি;বরং কেউ তা দ্বারা রাসূল সাল্লাল্লাহু, কেউ কোরআন উদ্দেশ্য নিয়েছেন। তবে সবচেয়ে প্রধান্যতম ব্যখ্যা হলো: এখানে নূর দ্বারা “নূরে হেদায়েত” উদ্দেশ্য যা আয়াতের আগ পর দ্বারা বুঝে আসে। আর আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর হাদীস দলীল হিসাবে পেশ করা নিতান্তই ভুল। কারণ এটি একটি জাল ও “মওযু” হাদীস যা সুলাইমান নদভী তাঁর স্বীয় গ্রন্থ “সীরাতুন্নবীতে” উল্লেখ করেছেন৷ তাই আল্লাহর রাসূলকে যারা আল্লাহর জাতি নূরের তৈরী বলে বিশ্বাস করবে, তারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত থেকে বের হয়ে যাবে এবং গোমরাহ ও বিদআতি  এমনকি ইমানচ্যুত হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। (সূরা কাহাফ ১০১, রুহুল মাআনী ৪/ ১৩১ সীরাতুন্নবী আল্লামা সাইয়েদ সুলাইমান নদভী ৩/ ৪১৪)

Loading

Facebook
X
WhatsApp
Telegram