বরাবর,
প্রধান মুফতি সাহেব দা.বা.
কেন্দ্রীয় দারুল ইফতা বাংলাদেশ
তত্ত্বাবধানে- শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার ঢাকা
কুড়াতলী, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯
বিষয়: মিরাস প্রসঙ্গে
মুহতারাম, বাদ সালামে মাসনূন, গত কয়েক বৎসর পূর্বে আমাদের বাবা ইন্তেকাল করেছেন । তিনি ইন্তেকালের সময় তিন ছেলে ও তিন মেয়ে ও স্ত্রী রেখে গেছেন । এর কিছু দিন পর আমাদের মায়েরও ইন্তেকাল হয় । মৃত্যুর সময় বাবা তিন ধরনের সম্পত্তি রেখে গেছেন ।
১ ) ঢাকায় বহুতল ভবন, যা বাবার অর্থ ব্যয়ে আমাদের মেজো ভাই নিজ মেধা ও শ্রম দিয়ে নির্মাণ করেছেন । তবে মেজ ভাইয়ের ব্যক্তিগত কোন অর্থ তাতে ব্যয় হয়নি ।
২ ) আমাদের গ্রামের বাড়ীতে বাবার জায়গার উপরে মার্কেট , যা আমাদের বড় ভাই দোকান ভাড়া দেয়ার বিনিময়ে অগ্রিম অর্থ গ্রহণ, ঋণ গ্রহন, বাবার থেকে নগদ অর্থ গ্রহণ এবং বাবার অন্যান্য জমি বিক্রয় লব্ধ অর্থ ব্যয়ে নিজ মেধা ও শ্রম দিয়ে নির্মাণ করেছেন । তবে এই মার্কেট নির্মাণে বড় ভাইয়ের ব্যক্তিগত কোন অর্থ ব্যয় হয়নি
৩ ) গ্রামের ফসলী জমি।
মুহতারাম , আমাদের বাবার মিরাস সম্পত্তি বন্টন প্রশ্নে বড় ভাই ও মেজ ভাইয়ের বক্তব্য হলো , যেহেতু বড ভাই নিজ মেধা ও শ্রম দিয়ে (যদিও নিজ অর্থ দিয়ে নয়) গ্রামের বাডীর মার্কেট নির্মাণ করেছেন এবং মেজ ভাই নিজ মেধা ও শ্রম দিয়ে (যদিও নিজ অর্থ দিয়ে নয়) ঢাকার বাড়ী নির্মাণ করেছেন, এতে বোনদের কোন অবদান নেই।
সুতরাং ঢাকার বাডী ও গ্রামের বাডীর মার্কেট থেকে বোনেরা কোন অংশ পাবেনা। শুধু জমির মূল্যের অংশ পাবে।
অতএব, মুহতারাম মুফতী সাহেবের নিকট আমাদের সবিনয় আরজ এই যে, “ ঢাকার বাড়ী ও গ্রামের বাড়ীর মার্কেট থেকে বোনেরা কোন অংশ পাবে না , শুধু জমির মূল্যের অংশ পাবে” ভাইদের এমন বক্তব্য শরীয়তের দৃষ্টিতে সঠিক কি না ? না হলে কোনটি সঠিক জানিয়ে কৃতার্থ করবেন।
নিবেদক
মৃতের কন্যাগণ
الجواب باسم ملهم الصدق والصواب
ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির মালিকানাধীন রেখে যাওয়া সকল সম্পত্তিতে তার সকল ওয়ারিশগণ হকদার হিসেবে গন্য হয়। আর পিতার জীবদ্দশায় তার সম্পত্তিতে তার কোন সন্তানের হস্তক্ষেপে তথা:- মেধা-শ্রম ব্যয় বর্ধিত হলে উক্ত বর্ধিত সম্পত্তি যদি পিতা মেধা-শ্রম ব্যয়কারী সন্তানকে হেবা করে দেন, তাহলে সেক্ষেত্রে উক্ত বর্ধিত সম্পত্তি ঐ সন্তানের মালিকানাধীন সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে। অন্যথায় উক্ত বর্ধিত সম্পত্তি পিতার মালিকানাধীন সম্পত্তি হিসেবেই থেকে যাবে। ফলে পিতার মৃত্যুর পরে উক্ত বর্ধিত সম্পদে তার সকল ওয়ারিশগণ হকদার হবেন।
সুতরাং প্রশ্নোক্ত সূরতে আপনাদের বাবার অর্থ ব্যয়ে তাঁর জীবদ্দশায় ঢাকায় নির্মিত বহুতল ভবন এবং গ্রামের বাড়িতে তারই জমির উপর নির্মিত মার্কেট, যদি আপনার পিতার জীবদ্দশায় আপনাদের বড়ভাই এবং মেজো ভাইকে তাদের মেধা ও শ্রমের উপহার স্বরূপ হেবা করে যান তাহলে উক্ত বহুতল ভবন এবং মার্কেট তাদের মালিকানাধীন সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে। আর যদি তিনি তাদেরকে জীবদ্দশায় হেবা না করে যান, তাহলে উক্ত বহুতল ভবন এবং গ্রামের বাড়িতে নির্মিত মার্কেট আপনাদের পিতার মালিকানাধীন সম্পত্তি হওয়ার কারণে আপনারা তিনবোন সহ অন্যান্য ওয়ারিশগন সেগুলোতে হকদার হবেন। এক্ষেত্রে বড় ভাই এবং মেজো ভাইয়ের বক্তব্য সঠিক নয়।
القران الكريم، سورة النساء، الاية (7)
لِلرِّجَالِ نَصِيبٌ مِمَّا تَرَكَ الْوَالِدَانِ وَالْأَقْرَبُونَ وَلِلنِّسَاءِ نَصِيبٌ مِمَّا تَرَكَ الْوَالِدَانِ وَالْأَقْرَبُونَ مِمَّا قَلَّ مِنْهُ أَوْ كَثُرَ نَصِيبًا مَفْرُوضًا.
الدر المختار 8/606 مكتبة الازهر.
دفع لابنه مالا ليتصرف فيه ففعل وكثر ذلك فمات الاب: إن أعطاه هبة فالكل له، وإلا فميراث.
رد المحتار 6/506 زكريا.
لو اجتمع إخوة يعملون في تركة أبيهم ونما المال فهو بينهم سوية ، ولو اختلفوا في العمل والرأي ا هـ… في القنية الأب وابنه يكتسبان في صنعة واحدة ولم يكن لهما شيء فالكسب كله للأب… واختلفوا في المتاع فهو للأب وللبنين الثياب التي عليهم لا غير،
(والله اعلم بالصواب)