প্রশ্ন: আমার চাচাতো ভাই তার স্ত্রীকে রাগান্বিত অবস্থায় এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক হাজার তালাক বললো, এরপর এক আলেমকে জিজ্ঞেস করলো, আমি আমার স্ত্রীকে এ রকম বলেছি, এর দ্বারা তালাক হয়েছে কিনা? তখন ঐ আলেম বললো, রাগান্বিত অবস্থায় তালাক দিলে তালাক হয় না। তাই তারা আগের মতই সংসার করছে।
এখন আমার জানার বিষয় হলো, তালাক হয়েছে কিনা? যদি হয়ে থাকে তাহলে আমাদের এলাকাবাসীর করণীয় কি?
উত্তর: ইসলামী শরীয়াহ মতে বৈধ কাজ সমূহের মধ্য হতে নিকৃষ্টতম হলো তালাক। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া তালাক বিশেষত তিন তালাক দেওয়া জঘন্যতম অপরাধ। এতদসত্বেও ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়, স্বাভাবিক বা রাগান্বিত অবস্থায়, বাস্তাবিক অর্থে বা ঠাট্টা মশকারা ছলে তালাক দিলে সর্বোচ্চ তিন তালাক পর্যন্ত পতিত হয়ে যায়। তবে কারো রাগ যদি এ পর্যায়ের হয় যে, স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক কথার সংমিশ্রনে তার কথায় ভারসাম্য ঠিক থাকে না, এমনকি তখন কি বলেছিলো তা পরবর্তীতে মনেও করতে পারে না, তাহলে সে উম্মাদের পর্যায়ভুক্ত বলে গণ্য হওয়ায় সে সময়ে তার প্রদত্ত তালাক পতিত হবে না।
সুতরাং প্রশ্নোক্ত সূরতে মূল বিবরণ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, আপনার চাচাতো ভাইয়ের রাগ চুড়ান্ত অর্থাৎ উম্মাদ পর্যায়ের ছিলো না। আর উম্মাদনা পর্যায়ের রাগ ছাড়া সাধারণ রাগান্বিত অবস্থায় প্রদত্ত তালাক যেহেতু পতিত হয়ে যায়, বিধায় তার উক্ত তিন তালাক স্ত্রীর উপর পতিত হয়ে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত উক্ত আলেমের কথা সঠিক নয়। এমতাবস্থায় আপনাদের এলাকাবাসীর করণীয় হলো, তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পৃথক করে দেয়ার ফিকির করা এবং সবাই বলার পরও পৃথক না হলে শরীয়াহ বিরোধী কাজে লিপ্ত থাকায় তাদের সাথে সম্পর্ক এবং সবধরনের লেনদেন পরিহার করে চলা। (বাকারাহ ২৩০,আবু দাঊদ১/২৯৬,শামী ৪/৪৩৯,হিন্দিয়া ১/৫৩৫,কাযীখান১/২৭৭)