মাসায়েল24

২০শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি * ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ * সকাল ৮:৪০

তারাবীহর জন্য মহিলাদের মসজিদে গমন

প্রশ্ন: মসজিদের তারাবীহতে মহিলাদের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে

মুহতারাম, আমাদের মসজিদে জায়গা দানকারী ব্যক্তি লন্ডন প্রবাসি। মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৫ সালে। জায়গা দানকারী ব্যক্তি ওয়াকফ করেন প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে। এতদিন মহিলাদের জন্য নামাজের আলাদা ব্যবস্থা না থাকলেও এখন উনি চাচ্ছেন ২য় তলায় পার্টিশন দিয়ে মহিলাদের তারাবীহ ও জুমাসহ অন্যান্য নামাজের জন্য ব্যবস্থা করতে। আমাদের এলাকাবাসির আপত্তি সত্তেও তিনি এ কাজের আঞ্জাম দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় হযরতের নিকট আরজি জানাচ্ছি, অতি দ্রুততম সময়ে ফাতওয়া জানিয়ে বাধিত করবেন।

 

الجواب باسم ملهم الصدق والصواب

উত্তর:  ইবাদাতের মধ্যে অন্যতম একটি ইবাদাত হলো নামায। যা আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য অর্জনের মোক্ষম একটি মুহুর্ত। নামাযের গুরুত্বের দিক থেকেই আল্লাহ তা’য়ালা পুরো জমিনকে নামাযের জন্য অনুুকুল ও পাক হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তবে হারামাইন ও বাইতুল মুকাদ্দাস এর পর শরয়ী মসজিদ সর্বাপেক্ষা ফযীলতপূর্ণ। শরয়ী ওজর ব্যতিত জামাতে শরীক হওয়া প্রতিটি বালেগ পুরুষের জন্য সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, যা ওয়াজিবের কাছাকাছি।

ইসলামের সোনালী যুগে কঠোর শর্তে নারীদের মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে নামায আদায়ের নজীর থাকলেও স্বয়ং রাসূল স. নারীদের জন্য ঘরের কোণকে নামায আদায়ের উত্তম স্থান হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন।
আম্মাজান আয়েশা সিদ্দিকা রা. বহুবিধ ফিতনার দরুন রাসূল স. কর্তৃক নারীদের মসজিদে গমনকে নিষেধ করার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অর্থাৎ রাসূল স. নারীকেন্দ্রিক ফিতনাগুলো দেখলে অবশ্যই তাদের মসজিদে গমনকে নিষেধ করতেন।

তেমনিভাবে ওমর রা.ও ফিতনার দরুন নারীদের জামাতে শরীক হওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হওয়াকে অপছন্দ করতেন। রাসূল স. এর নির্দেশকে সাহাবায়ে কেরাম অপছন্দ করবেন, সেটা কল্পনাও করা যায় না। তাতে বোঝা যায়, স্বয়ং রাসূল স.ও নারীদের মসজিদে গমনকে আবশ্যক বা উৎসাহিত করতেন না।
হানাফি মাযহাবের গ্রহণযোগ্য ও ফাতওয়াযোগ্য মত হলোÑমহিলাদের জন্য মসজিদে গমনের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়া মাকরুহ।

সুতরাং নারীকেন্দ্রিক ফিতনার ছড়াছড়ি ও অসভ্যপূর্ণ এ সময়ে, যখন নারী নিজ ঘরেই নিরাপদ নয়; তখন নারীকে একাকী ঘরের বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দেয়া বা সুযোগ করে দেয়া কতোখানি যুক্তিসঙ্গত তা বলাই বাহুল্য। এটা নিশ্চিত যে, বর্তমান যুগের তুলনায় আম্মাজান আয়েশা সিদ্দিকা রা. এর যুগ কোটিগুণে ভালো ছিলো। তথাপি তিনি নারীদের মসজিদে গমনের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়াকে নিরুৎসাহিত করেছেন।

অতএব, কুরআন-সুন্নাহর বাণী, সাহাবায়ে কেরাম ও মুজতাহিদ ইমামগণের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নারীদের জন্য শুধু মসজিদে গমনের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়া মাকরুহ। এক্ষেত্রে কোনো দেশ বা স্থান শরীয়তের দলীল নয়।
তবে নিছক মসজিদের উদ্দেশ্যে না হয়ে, ভিন্ন কোনো জরুরী কাজে ঘর থেকে বের হওয়ার পর নামাযের সময় হলে তৎক্ষণাৎ নিকটবর্তী কোনো মসজিদে গিয়ে নামায আদায় করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে আদায় হয়ে যাবে।

মোটকথা:
(ক) মসজিদের উপরের কোনো অংশে নারীদের জন্য পর্দা ও নিরাপত্তার সহিত নামাযের ব্যবস্থা রাখার অনুমতি থাকলেও নারীদেরকে ওয়াক্তিয়া, জুমআ ও তারাবীহতে অংশগ্রহণের জন্য দাওয়াত করা কিংবা উৎসাহিত করার সুযোগ নেই।
(খ) নারীদের জন্য জামাতের সাথে নামায আদায়ের তুলনায় পর্দা ও নিরাপত্তার বিধান অগ্রগণ্য।

الأدلة الشرعية

القرآن الكريم: (سورة الأحزاب، رقم الاية 30):  وقرن في بيوتكن ولا تبرجن تبرج الجاهلية الأولى.

 

سنن الترمذي: (رقم حديث، 1173)

عن عبد الله رضي الله تعالى عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال المراة عورة فإذا خرجت استشرفها الشيطان.

صحيح البخاري:(رقم الحديث، 146)

عن عائشة رضي الله تعالى عنها أن أزواج النبي صلى الله عليه وسلم كن يخرجن بالليل إذا تبرزن إلى المناصع -وهو صعيد أفيح- فكان عمر يقول للنبي صلى الله عليه وسلم أحجب نسائك فلم  يكون رسول الله صلى الله عليه وسلم يفعل فخرجت سودة بنت زمعة زوج النبي صلى الله عليه وسلم ليله من الليالي عشاء وكانت  إمراة طويلة فناداها عمر ألا قد عرفناك يا سودة حرصا على أن ينزل الحجاب فأنزل الله آية الحجاب.

صحيح البخاري:( رقم الحديث، 869)

عن عائشة رضي الله عنها قالت لو أدرك رسول الله صلى الله عليه وسلم ما أحدث النساء لمنعهن كما منعت نساء بني إسرائيل.قلت لعمرة أو منعن قالت نعم.

الطبراني  في الأوسط:(رقم الحديث،٩١٠١)

عن أم سلمة رضي الله عنها قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم صلاة المراة في بيتها خير من صلاتها في حجرتها وصلاتها في حجرتها خير من صلاتها في دارها وصلاتها في دارها خير من صلاتها خارج. لَا يُرْوَى هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ إِلَّا بِهَذَا الْإِسْنَادِ، تَفَرَّدَ بِهِ إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ

تنوير الأبصار : (77 ،دار الكتب العلمية)

ويكره حضورهن الجماعة مطلقا على المذهب.

 

الدر المختار :(77,دار الكتب العلمية)

ويكره حضورهن الجماعة وعيد ووعظ مطلقا ولو عجزوا ليلا على المذهب المفتى به لفساد الزمان، واستثنى العجائز العجائز المتفانية.

هداية : (346،مكتبه البشرى)

يعني الشواب منهن لما فيه من خوف الفتنة.

 

العناية:(١/٣٨٦.رشيدية)

كانت النساء يباح لهن الخروج إلى الصلوات ثم لما صار سببا للوقوع في الفتنة منعهن عن ذلك جاء في التفسير أن قوله تعالى ولقد علمنا المستقدمين منكم والمستاخرين نزلت في شأن النسوة حيث كان المنافقون يتأخرون للإطلاع على عوراتهن ولقد نهى عمر عن الخروج إلى المساجد فشكون إلى عائشة ذلك فقالت لو علم النبي صلى الله عليه وسلم ما علم عمر ما أذن لكن الخروج فاحتج به علماؤنا ومنع الشواب الخروج مطلقا وأما العجائز فمنعهن أبو حنيفة عن الخروج في الظهر والعصر دون الفجر والمغرب والعشاء العجائز  كلها لإنتفاء الفتنة بقلة الرغبة في العجائز كما أجيز لهن ذلك في العيد بالاتفاق.

 

فتوی محمودیہ: (٢ /٣٣٢، جامعہ فاروقیہ)

 فتنہ فساد کی وجہ سے ممنوع ہے حضرت عائشہ رضی اللہ عنہ فرماتے ہیں عورتوں کی یہ حیات حالت اگر حضور اکرم صلی اللہ علیہ وسلم  ملاحظہ فرماتے  تو مسجد میں جانے سے منع فرما دیتے بعض اکابرین صحابہ رضی اللہ عنہم نے تو تدبیروں سے اپنے عورتوں کو مسجد میں جانے سے روکا ہے۔

فتوی دار العلوم دیوبند: (٣/۴٧ دارالاشات)

اس زمانے میں بلکہ  پہلے سے عورتوں کا جماعت میں شریک ہونے کے لیے مسجد و عیدگاہ میں جانا ممنوع و مکروہ ہے صحابہ کرام کے زمانے میں یہ ممنوع ہو چکا ہے۔

 

Loading

Facebook
X
WhatsApp
Telegram